জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাই করার উপায় | NID Card Verification

যারা নতুন ভোটার নিরন্ধন হয়েছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটার আইডি কার্ড হাতে পাননি তারা চাইলে অনলাইন এর মাধ্যমে ১০৫ থেকে পাওয়া NID নাম্বার দিয়ে ভোটার তথ্য যাচাই করতে পারেন। অনলাইনে ভোটার তথ্য যাচাই করা সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া এই লেখাটিতে দেখানো হবে।

বর্তমানে নির্বাচন কমিশন nidw কর্তৃক ভোটার তথ্য দেখার সুবিধাটি অফিসিয়ালি বন্ধ রয়েছে। পূর্বে নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd থেকে ভোটার স্লিপ দিয়ে নতুন ভোটারদের এনআইডি নাম্বার বা ভোটার তথ্য দেখা যেত। বর্তমানে অনলাইন থেকে এই সুবিধাটি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ফর্ম নাম্বার দিয়ে এসএমএস এর মাধ্যমে এন আইডি নাম্বারটি বের করা যায়।

সাধারণত ব্যক্তির ভ্যালিডিটি যাচাই করার জন্য অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করা হয়। বিভিন্ন কর্মস্থানের ক্ষেত্রে, চাকরিতে নিয়োগ কিংবা বাড়ি ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনকারীর আইডি কার্ডের তথ্যগুলো সঠিক কিনা সেটা যাচাই করতে পারবেন অনলাইনে।

এছাড়াও নতুন ভোটার নিবন্ধনদের ক্ষেত্রে এসএমএস এর মাধ্যমে পাওয়া আইডি কার্ড নাম্বার দিয়ে ভোটার তথ্য যাচাই করতে পারবেন। বিশেষ করে আপনার ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন ডাটাবেজে আপলোড হয়েছে কিনা এটা যাচাই করতে পারবেন।

ভোটার তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া

অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করার জন্য প্রথমে ldtax.gov.bd ওয়েবসাইটের প্রবেশ করতে হবে, এরপরে একটি সচল মোবাইল নাম্বার, 105 নাম্বার থেকে আসা NID নাম্বার এবং জন্ম তারিখ প্রদান করে “পরবর্তী পদক্ষেপ” বাটনে ক্লিক করুন।

সাধারণত ঘরে বসে দুই ভাবে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করতে পারবেন।

  • এসএমএস এর মাধ্যমে।
  • অনলাইনের মাধ্যমে।

এই লেখাটিতে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই প্রক্রিয়াগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

এসএমএস এর মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই

১০৫ নাম্বারে এসএমএস পাঠিয়ে খুব সহজেই ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করতে পারবেন। এই কাজটি করার জন্য প্রথমে আপনার মোবাইল থেকে মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করুন SC স্পেস  দিয়ে F স্পেস দিয়ে এসএমএসের মাধ্যমে আসা আইডি কার্ড নাম্বারটি বসিয়ে দিন পরবর্তীতে স্পেস D এবং স্পেস দিয়ে জন্মতারিখ লিখে এসএমএসটি ১০৫ নাম্বারে পাঠিয়ে দিন।

এই পদ্ধতিতে আপনারা স্লিপ নাম্বার দিয়েও ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করতে পারবেন। যদি ১০৫ নাম্বার থেকে এসএমএস এর মাধ্যমে আপনার এনআইডি কার্ড নাম্বার না জানানো হয় তাহলে নিবন্ধন স্লিপ নাম্বার বা ফরম নাম্বার বসিয়ে এসএমএস পাঠিয়ে দিন।

২৪ ঘন্টার ভিতরে ফিরতি এসএমএস এ আপনার ভোটার আইডি কার্ডের সকল তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে।

উদাহরণ: SC <space> F <space> NID/from number <space> D <space> Date of birth

জন্ম তারিখ YY-MM-DD ফরমেটে পূরণ করবেন। প্রথমে বছর (Year) এরপরে মাস (Month) এরপরে দিন (Day) বসিয়ে দিন।

অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই

অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করার জন্য আমরা জাতীয় পেনশন স্কিম এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ব্যবহার করব। এই ওয়েবসাইট থেকে মাত্র 10 মিনিটে শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বার এবং এনআইডি নাম্বার ও জন্ম তারিখ দিয়ে ভোটার তথ্য যাচাই করতে পারব।

অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করার জন্য অবশ্যই NID কার্ড নাম্বার প্রয়োজন হবে। সাধারণত ভোটার নিবন্ধন করার পরে আইডি কার্ড অনলাইন সার্ভারে আপলোড হলে ১০৫ নাম্বার থেকে এসএমএস এর মাধ্যমে ভোটার আইডি নাম্বার বা এনআইডি নাম্বার জানিয়ে দেওয়া হয়।

তাই যদি আপনার ফোনে উক্ত নাম্বার থেকে এসএমএস করে এনআইডি নাম্বার জানিয়ে দেয় তাহলে অনলাইন থেকে খুব সহজেই ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যগুলো যাচাই করতে পারবেন। ভোটার তথ্য যাচাই প্রক্রিয়াঃ

ধাপ ১: পেনশন স্কিম ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন

প্রথমে গুগলে গিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিখে সার্চ করে upension.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। 

ধাপ ২: প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রদান

উক্ত লিংকে ভিজিট করার পরে নিচের ছবির মত একটি পেইজে নিয়ে আসা হবে, এখান থেকে প্রথমে একটি প্যাকেজ স্কিম বাছাই করুন, মধ্যম আয় বাছাই করা শ্রেয়।   আপনার ১০/১৩ কিংবা ১৭ সংখ্যার নাম্বার ও জন্মতারিখ উল্লেখ করুন।  এরপরে একটি সচল মোবাইল নাম্বার বসিয়ে দিন। অবশ্যই মোবাইল নাম্বারটি আপনার আশেপাশে থাকতে হবে কেননা নিবন্ধন সম্পন্ন না হলে ওটিপি যাচাই করা হবে।

এর পরে আপনাকে আপনার দেওয়া মোবাইল নাম্বারে একটি ছয় সংখ্যার ওটিপি কোড পাঠানো হবে, সেটি দিয়ে আপনাকে এখানে ভেরিফাই করে নিতে হবে, মনে রাখবেন এই ওটিপি কোড একটি নাম্বারে মাত্র প্রতি ৫ মিনিটে একবার প্রেরণ করা হবে। আপনি যার জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করতে চান তার যদি পেনশন স্কিমে অ্যাকাউন্ট করা থাকে তাহলে তার  পরিচয় পত্রের তথ্য দেখতে পারবেন না, 

মোবাইল এ পাওয়া এসএমএসে ওটিপি সংখ্যাটি বসিয়ে দিন। ওটিপি পেতে দেরি হলে পুনরায় ওটিপি পাঠানোর জন্য আপনাকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। অথবা নতুন করে যাচাই পদ্ধতি পুনরায় করতে হবে। ওটিপি সঠিক থাকলে নিচে ভোটার তথ্য দেখা যাবে।

উক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই ঘরে বসে আপনার মোবাইল ফোন থেকে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করতে পারবেন। তবে যারা এনআইডি নাম্বার জানেন না তারা চাইলে ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড যাচাই করতে পারেন।

ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার তথ্য যাচাই পদ্ধতি

ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার তথ্য যাচাই করার জন্য nidw অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এরপরে এখানে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো প্রদান করে ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি ডাউনলোড করে ভোটার তথ্যগুলো যাচাই করতে পারবেন।

প্রথমে https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ ওয়েবসাইটে ভিজিট করে একাউন্ট রেজিস্টার থেকে ফরম নাম্বার ও জন্ম তারিখ প্রদান করে, ক্যাপচা পূরণ করে “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করুন।

এরপরে এনআইডি কার্ডে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আপনার বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা যাচাই করুন। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানার বিভাগ, জেলা ও উপজেলা যাচাই করতে হবে। এরপরে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন।

তারপর ভোটার নিবন্ধন এর সময় দেওয়া মোবাইল নাম্বারটি বসানো থাকবে, যদি কোন নাম্বার দেয়া না থাকে তাহলে একটি সচল নাম্বার বসিয়ে “বার্তা পাঠান” বাটনে ক্লিক করুন। কিছু সময়ের মধ্যে nidw থেকে এসএমএস এর মাধ্যমে একটি OTP কোড পাঠানো হবে, যথাক্রমে OTP কোড ভেরিফিকেশন করুন।

পরবর্তীতে নতুন একটি পেজ ওপেন হবে এখানে একটি QR কোড দেয়া থাকবে। অন্য একটি মোবাইল ফোন থেকে গুগল প্লেস্টোরে গিয়ে Nid Wallet এপ্লিকেশনটি ইন্সটল করুন। এপ্লিকেশনটি ওপেন করে QR কোডটি স্ক্যান করুন। এরপরে অটোমেটিক ভাবে উক্ত অ্যাপসে ক্যামেরা ওপেন হবে।

প্রথমে ডানে এরপরে বামে এরপরে সোজাসুজি মুখমণ্ডল রেখে ফেইস ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করুন। পুনরায় পূর্বের ডিভাইসে ফিরে যান, এখানে সেট পাসওয়ার্ড নামক একটি পেইজে নিয়ে আসা হবে। এখান থেকে সেট পাসওয়ার্ড দিয়ে একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড বসিয়ে এটিকে সংরক্ষণ করে রাখুন।

পরবর্তীতে আপনার Nidw প্রোফাইলে নিয়ে আসা হবে এখান থেকে একটু নিচে লক্ষ্য করলে “ডাউনলোড” নামক একটি বাটন দেখতে পাবেন। ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করার পরে আপনার ডিভাইসে ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি পিডিএফ আকারে ডাউনলোড হবে।

উক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই অনলাইন থেকে আপনার আইডি কার্ডের পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে ভোটার তথ্যগুলো যাচাই করতে পারবেন। তবে ফর্ম নাম্বার দিয়ে যদি এই ওয়েবসাইটে লগইন করতে না পারেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার আইডি কার্ডটি এখনো তৈরি হয়নি।

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।